গাজায় চিকিৎসা কর্মীদের হত্যা, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে এবার চিকিৎসাকর্মীদের ওপর সরাসরি হামলার একটি নতুন ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিওটিতে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে মেডিকেল যানবাহনের ভেতরে থাকা প্রতিফলক জ্যাকেট পরা ১৫ জন জরুরি সেবাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করছে ইসরায়েলি সেনারা। মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক মহলে এ ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নতুন করে জোরালো হয়েছে।
চলতি এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ভিডিওটি বিভিন্ন সামাজিক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে চালানো এক আক্রমণের পর থেকে গাজায় ইসরায়েল যে ভয়াবহ সামরিক অভিযান শুরু করেছে, তা এখনও চলছে। সেই হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়। ইসরায়েল এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে গাজায় আকাশ ও স্থলপথে হামলা চালায়, যার শিকার হয়ে আসছে সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসাকর্মীরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫০,৬৬৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৫,২২৫ জন আহত হয়েছেন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজার হাজার মানুষের সঠিক হিসাব না থাকায় মৃত্যুর সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকে, বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সফরকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। হাজারো মানুষ ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষোভে অংশ নেয় এবং নেতানিয়াহুর সফর বাতিলের দাবি জানায়। এছাড়া ইসরায়েলি নীতির কঠোর সমালোচনা করেন ইউরোপ ও আমেরিকার মানবাধিকারকর্মীরা।
গাজায় চিকিৎসাকর্মীদের হত্যার এই মর্মান্তিক ভিডিও ইসরায়েলি অভিযানের মানবিকতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। যুদ্ধের নীতিমালা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। এখন বিশ্ববাসীর দায়িত্ব—এই নৃশংসতা বন্ধে আরও সরব হওয়া এবং ফিলিস্তিনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা