‘হাত উঁচিয়ে বলছিলাম, দস্তগীর ভাই আমরা সাংবাদিক, গুলি কইরেন না’

আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন ফটোসাংবাদিক মোহিদ হোসেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই সিলেটে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান মোহিদ হোসেন।

জবানবন্দিতে মোহিদ হোসেন বলেন, ‘আমি হাত উঁচিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে বলছিলাম, দস্তগীর ভাই (এডিসি), আমরা সাংবাদিক, আমাদের গুলি কইরেন না। তারপরও পুলিশ গুলি ছুড়তে থাকে।’

গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে করা মামলায় মোহিদ হোসেন ৩০তম সাক্ষী হিসেবে এই জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে মোহিদ হোসেন বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই সারা দেশে বিএনপির গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি ছিল। এর অংশ হিসেবে সিলেটের মধুবন পয়েন্টের কাছে অবস্থিত কালেক্টরেট জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর একটি গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি সংবাদ সংগ্রহের জন্য যান।

১৯ জুলাইয়ের আগে আন্দোলনে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং জানাজা শেষে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি জিন্দাবাজারের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ পেছন দিক থেকে অতর্কিতে গুলিবর্ষণ করে। তিনি ও তাঁর সহকর্মী তুরাব পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন।

পুলিশ তাঁদের (সাংবাদিকদের) লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছিল বলে উল্লেখ করেন মোহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশের গুলিতে আমার সহকর্মী দৈনিক জালালাবাদ ও দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার ফটোসাংবাদিক আবু তোরাব গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে বসে পড়ে। তাকে আমি রিকশায় করে এবং পরবর্তী সময়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজন চিকিৎসায় বাধা দেওয়ায় তাকে বেসরকারি ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে সে মারা যায়।’

পুলিশের সাবেক এডিসি সাদিক কাউসার দস্তগীর, কোতোয়ালি থানার সাবেক এসি মিজানুর রহমান, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মহিউদ্দিনসহ আরও অনেকে গুলিবর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন মোহিদ হোসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *