খেলাধুলা

স্পেনের ও ইংল্যান্ড ইউরো কাপের ফাইনালে মুখোমুখি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ১৩ জুলাই ২০২৪ (জাতির আলো) :  আগামীকাল রবিবার বার্লিনে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে স্পেন ও ইংল্যান্ড মুখোমুখি হবে। বড় আসরে এই দুই দল খুব কমই একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।
প্রথমবার স্পেন ও ইংল্যান্ড কোন প্রতিন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৫০ ব্রাজিল বিশ^কাপে। দুটি দল একই গ্রুপে একে অপরের মোকাবেলা করেছে। ঐ আসরে প্রথম ম্যাচটি দুই দলই জয়ী জয়। ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড চিলিকে ২-০ গোলে ও স্পেন যুক্তরাষ্ট্রকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে।
এরপর স্পেন চিলিকে পরাজিত করলেও ইংল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১-০ গোলে হেরে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে অঘটনের স্বীকার হয়। যার ফলে রিও ডি জেনিরোতে স্পেনের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এগিয়ে যেতে হলে ইংল্যান্ডকে জয় ভিন্ন বিকল্প পথ খোলা ছিলনা। কিংবদন্তী ফরোয়ার্ড টেলমো জারার গোলে স্পেন জয় ছিনিয়ে নেয়। ইংল্যান্ডকে বিদায় করে স্পেন শেষ পর্যন্ত চার দলের ফাইনাল রাউন্ডে উঠেছিল। সেখানে আসরের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ের সাথে ড্র করলেও ব্রাজিলের কাছে ৬-১ ও সুইডেনের কাছে ৩-১ গোলে পরাজিত হয়েছিল।
হোম এন্ড এ্যাওয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে ইংল্যান্ড ১৯৬৮ ইউরোর মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ১৯৮০ ইউরোতে এই দুই দল আবারো মুখোমুখি হয়। কিন্তু উভয় দলই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়। এর দীর্ঘদিন পর ১৯৮২ বিশ^কাপে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে তারা আবারো মুখোমুখি হয়। গ্রুপের আরেক দল ছিল পশ্চিম জার্মানি। ইংল্যান্ডের সাথে ড্র করা জার্মানরা স্পেনকে পরাজিত করে। এর ফলে স্বাগতিক স্পেন টুর্নামেন্ট থেকে হতাশাজনক বিদায় নেয়। মাদ্রিদে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচটি গোলশুন্য ড্র হয়েছিল। এ কারনে কোন ম্যাচ না হেরেও ইংল্যান্ডও বিদায় নেয়। পশ্চিম জার্মানি সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে ইতালির কাছে হেরে রানার্স-আপ হয়।
ইংল্যান্ড ও স্পেন একে অপরের মোকালো খুব কমই করেছে। কিন্তু ইউরো ৯৬’র কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের ম্যাচটি ইংলিশ ফুটবল ইতিহাসে আইকনিক ম্যাচ হিসেবে বিবেচিত হয়। ওয়েম্বলিতে ম্যাচটিত নির্ধারিত ও  অতিরিক্ত সময়ে গোলশুন্য ড্র ছিল। পেনাল্টি শুট আউটে ফার্নান্দো হিয়েরো স্পেনের প্রথম কিক বারের উপর দিয়ে বাইরে পাঠান। ইংল্যান্ড এরপর চার শটের চারটিতেই সফল হয়। এরপর গোলরক্ষক ডেভিড সিম্যান্স স্পেনের মিগুয়ের এ্যাঞ্জেল নাদালের শটটি রুখে দেন। ইংল্যান্ড ৪-২ গোলে জয়ী হয়ে সেমিতে খেলার যোগ্যতা অর্জণ করে। শেষ চারে পেনাল্টিতে জার্মানির কাছে হেরে তাদের বিদায় নিতে হয়। এই ম্যাচে বর্তমান ম্যানেজার গ্যারেথ সাউথগেট তার নির্ধারিত শটটি মিস করেছিলেন।
২০০৪ সালের নভেম্বরে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রীতি ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছিল স্পেন। কিন্তু বেশ কিছু সফরকারী খেলোয়াড়কে ঘিড়ে বর্ণবাদী আচরণ ঐ সময় ম্যাচের ফলাফলকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। এইসার ডেল হরনোর গোলে স্পেনের জয় নিশ্চিত হয়। রাউলের পেনাল্টি শট সেভ না হলে জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারতো। এই ম্যাচে এ্যাশলে কোল ও শন রাইট-ফিলিপসকে নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য করে আলোচনার ঝড় তুলেছিল স্প্যানিশ সমর্থকরা।
২০১৮ সালের পর রোববার ফাইনালে এই দুই দল প্রথমবারের মত মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। উয়েফা নেশন্স লিগের প্রথম আসরে ইংল্যান্ড ও স্পেন মুখোমুখি হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে ওয়েম্বলির ম্যাচটি স্পেন ২-১ গোলে হয়ী হয়। কিন্তু সেভিয়াতে ফিরতি ম্যাচে ইংল্যান্ড ৩-২ গোলে জয়ী হয়ে প্রতিশোধ নেয়। রাহিম স্টার্লিংয়ের জোড়া গোলের সাথে মার্কাস রাশফোর্ড অপর গোলটি করেন। ইংল্যান্ড প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল। পাকো আলকাসার ও সার্জিও রামোস দ্বিতীয়ার্ধে স্পেনের হয়ে দুই গোল পরিশোধ করেন। ইংল্যান্ড গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে ফাইনাল ফোরে খেলে। নেদারল্যান্ডসের কাছে সেমিফাইনালে  তারা ৩-১ গোলে পরাজিত হয়। স্থান নির্ধারনী ম্যাচে পেনাল্টিতে সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে ইংল্যান্ড তৃতীয় স্থান লাভ করে।

image_print
Spread the love
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments