অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এএফম তাওহীদুল ইসালামের সভাপতিত্বে এবং প্রকৌশলী মশিউর রহমান মুন্না, শফিউল আলম শফিক এবং আবিদা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নির্বাচন পরবর্তী বাংলাদেশ গড়ার কাজে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী দিনে নির্বাচন যাতে সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে হয় সেটিই মুখ্য বিষয়। নির্বাচনে জিতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে, অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিদের সহযোগিতা অনেক বেশি প্রয়োজন হবে আমাদের জন্য। আপনাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গঠিত দল বিএনপি, আপনারা তার আদর্শে বিশ্বাসী। আপনারা কষ্ট করে বিদেশে বিভিন্নভাবে দলের কর্মকাণ্ডে যোগ দিচ্ছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে অবদান রেখেছেন, তা অব্যাহত রাখতে হবে।
আমির খসরু বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বলতে দ্বিধা নেই যে, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে অনেক কষ্ট করেছেন আপনারা। অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিরা বাংলাদেশের সামগ্রিক বিষয়ে বেশ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। আপনাদের কর্মের সেই রেজাল্ট আমরা পেয়েছি। এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুল হক। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দোয়া পরিচালনা করেন অস্ট্রেলিয়া বিএনপির কোশাধ্যক্ষ মনজুরুল হক আলমগীর। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সেলিম লকিয়ত।
মোহাম্মদ রাশেদুল হক ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের সতর্কতার সঙ্গে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। কারণ একটি চক্র বাংলাদেশে যেন নির্বাচন না হয়, সে জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের যেন দাঁতভাঙা জবাব দিতে হয়, এখন থেকে আমাদের কাজ করে যাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন যাতে কোনোক্রমেই ব্যাহত না হয়। নির্বাচনে যারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। জিয়াউর রহমানের প্রত্যেক সৈনিক সে জন্য প্রস্তুত আছে, থাকবে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশির অভিবাসীরা এবার বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন বলে সুখবর দেন রাশেদুল হক। তবে প্রক্রিয়া এখনও ঠিক হয়নি।
আর বাংলাদেশের মানুষদের জন্য সুখবর খবর হলো- অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসের জন্য আর দিল্লি যেতে হবে না। এখন বাংলাদেশ থেকেই অস্ট্রেলিয়ার ভিসার আবেদন করা যাবে। এরই মধ্যে ঢাকায় সে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জনান রাশেদুল হক। এই প্রক্রিয়ার পেছনে অস্ট্রেলিয়া বিএনপির অবদান রয়েছে বলে জানান তিনি।
অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এএফএম তাওহিদুল ইসলাম প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মতোই তারেক রহমান একজন আদর্শবান কাণ্ডারি হবেন। আমি সবসময় জিয়াউর রহমানের কথা বলি। জিয়ার আদর্শের প্রতিচ্ছবি আমরা তারেক রহমানের মধ্যে দেখতে পাই। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেখানে তারেক রহমানের সাধারণ জীবনযাপনের কিছু চিত্র দেখা যায়। আমি আশা কবর, তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কাণ্ডারি হলে বাবার মতোই হবেন বলে আশা করি।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন, সততার মূর্ত প্রতীক। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার জিয়ার প্রশংসা করে বলেছিলেন, জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট। ব্রিটিশ নথিতে দেখা যায়, জিয়ার সততা এবং দেশপ্রেমিকতা ছিল শীর্ষে। অনন্য সাধারণ ভদ্রলোকের এই দল, জাতীয়তাবাদী দল ৪৭ বছরের ত্যাগ, সংগ্রাম ও ঐতিহ্য অতিক্রম করে এই জায়গায় এসেছে, এর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক (যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদা) মোহাম্মদ অমি ফেরদৌস সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির সংগ্রাম, ঐতিহ্য ও অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন।
বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অস্ট্রেলিয়া বিএনপি শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ৪০ জন শিশু এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ শাখার নব অনুমোদিত কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম শিবলি ও সদস্য সচিব বাদশা বুলবুলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন বিএনপি অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক সম্পাদক নামিদ ফারহান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম ও শাহ আলম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস কাঞ্চন শহীন, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সবুজ, যুবদলের জাহাঙ্গীর আলম ও ফারুক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মশিউর রহমান তুহিন ও জাহিদুর রহমান, খাজা দাউদ হোসেন, আশওয়াদুল হক বাবু, ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম, রেজনুর রহমান রুপন, মোস্তাফিজুর রহমান লাবু, জুম্মন হোসেন, মোকসেদ আলম দীপু, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ শাহেদ, হান্নান রানা, মফিজুল ইসলাম সাগর, আব্দুল আলীম, খাদিজা জামান রুপম, হাসনা হেনা, আজিজুন নাহার মালা, মুরাদ হোসেন, মোহাম্মদ আলী, ওয়ারিস মাহমুদ, আহসান হাবিব, আবু বকর সিদ্দিক, শাহীনূর রহমান, আবুল হোসেন, হারুনর রশিদ, মোহাম্মদ নূরুর হক, ফখরুল হক মুন্না, মোবারক হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও আসলাম খান প্রমুখ।