জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৪-র মতো অগ্নিসন্ত্রাস করলে কোনো ক্ষমা নয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে ২০১৩-১৪ সালের মতো অগ্নিসন্ত্রাস ও অমানবিক নৃশংসতা চালালে কোনো ধরনের সহনশীলতা দেখানো হবে না। গতকাল সোমবার লন্ডনে তাঁকে দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডনের মেথোডিস্ট সেন্ট্রাল হল ওয়েস্টমিনস্টারে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে যদি অগ্নিসংযোগ, সাধারণ মানুষের ওপর হামলার মতো কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয় তবে তাদের ক্ষমা করা হবে না।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন যে বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৩-১৪ সালে তথাকথিত আন্দোলনের নামে যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ বহু যানবাহনে পেট্রলবোমা ছুড়ে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে সারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছিল। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নারীসহ বহু লোক গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। ওই মানুষগুলো সেই ক্ষত নিয়ে এখনো অমানবিক জীবন যাপন করছে।’
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুক।
যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে হবে
গতকাল যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে লন্ডন শহরের তাজ হোটেলে সাক্ষাৎ করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে হবে।
কোনোভাবেই অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা দখল করতে পারবে না।
সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
শেখ হাসিনা ওই প্রতিনিধিদলকে বলেন, ‘আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার এরই মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
এতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বাধীনতা পাবে নির্বাচন কমিশন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, বিরোধী দলে থাকার সময় আওয়ামী লীগের প্রস্তাবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ছবির মাধ্যমে ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছিল এবং স্বচ্ছ ব্যালটে ভোটগ্রহণের নিয়ম চালু হয়েছিল।
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে প্রতিনিধিদল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আগামী নির্বাচন তদারকির জন্য ওই প্রতিনিধিদলকে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদল পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটেন ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে ব্রিটেনের বিনিয়োগ বাড়ছে।
এ সময় যুক্তরাজ্যকে বড় পরিসরে, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য যুক্তরাজ্যকে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।
এ সময় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যের সাহায্য চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়।
মোমেন বলেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাজ্যের মানবিক সহায়তার পরিমাণ কমেছে। তাই দেশটির প্রতি মানবিক সহায়তা তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে বাংলাদেশকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
এপিপিজির চেয়ারপারসন ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন এপিপিজির ভাইস চেয়ারপারসন এমপি বীরেন্দ্র শর্মা, এমপি ভ্যালেরি ভাজ ও এমপি ইমরান হুসেইন এবং স্কটল্যান্ডের বাংলাদেশবিষয়ক ক্রস-পার্টি গ্রুপের চেয়ারপারসন এমপি ফয়সল চৌধুরী।
২০১৩-১৪-র মতো অগ্নিসন্ত্রাস করলে কোনো ক্ষমা নয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। গতকাল যুক্তরাজ্যের তাজ হোটেলের মিটিংরুমে।

image_print
Spread the love
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments