ছোট্ট একটা দেশ, এত ভাগ কিসের আবার: শফিকুর রহমান
জাতির আলো ডেস্ক : দেশে কোনো অশান্তি হলে সবাইকে তা ভোগ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সাফ বলেছি, আমরা মেজরিটি-মাইনোরিটি মানি না। এ দেশের যারা নাগরিক, তারা সবাই সমমর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক। ছোট্ট একটা দেশ, এত ভাগ কিসের আবার? জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। কারণ, দেশ বাঁচলে আমিও বাঁচব, সবাই বাঁচবে। অশান্তি হলে সবাইকে তা ভোগ করতে হবে। আমরা একটা শান্তিপূর্ণ মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
গত শনিবার রাতে সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকার একটি অভিজাত রেস্তোরাঁ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এ কথা বলেন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে সিলেট মহানগর জামায়াত।
বিগত সরকারের আমলে জামায়াত ইসলামী সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিগত ১৩ বছর সারা দেশে আমাদের অফিস সিলগালা ছিল। আমাদের দলকে নির্বাচন কমিশন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের প্রতীক ও নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই চাপ আর কোনো দল পায়নি। ৫ আগস্টের আগে দেশে দখলদারি-চাঁদাবাজি হয়েছে। এখনো হচ্ছে। শুধু ফ্ল্যাগ বদল হয়েছে; ডান হাত থেকে বাম হাতে গেছে।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষ জাতীয় স্বার্থে এক হয়ে কাজ করব, শান্তির বাংলাদেশ গড়ব। আমরা কোনো দায়িত্ব পেলে মালিক হিসেবে নয়, পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করব। আমাদের নেতা-কর্মীদের আগে যে সম্পদ থাকবে, নির্বাচনের পরও সমান থাকবে। নিজের দিকে না তাকিয়ে জনগণের দিকে তাকাতে হবে। আমাদের কর্মীদের স্পষ্ট বলা হয়েছে, কারও সম্পদের দিকে তাকানো যাবে না। যদি এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা অধিকাংশ ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার মন্তব্য করে জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘বিগত সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সম্প্রদায়কে পক্ষ-বিপক্ষে উপস্থাপন করে নিজ নিজ স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাই। কিছু ঘটনা ঘটেছে রাজনৈতিক কারণে, তবে তা-ও আমরা সাপোর্ট করি না। আইনের ভিত্তিতে সবাইকে চলা উচিত।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। মহানগর সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী চন্দ্রনাথানন্দজি মহারাজ, সিলেট বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ সংঘ্যানন্দ মহাথের, সিলেট প্রেসবিটারিয়ান মিশনমণ্ডলীর সভাপতি ডিকন নিঝুম সাংমা, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ সিলেট জেলার সভাপতি গোপীকা শ্যাম পুরকায়স্থ ও কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রজত কান্তি ভট্টাচার্য, মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রদীপ দেব প্রমুখ।