কাশির সিরাপে ৭০ শিশুর মৃত্যু
ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে গাম্বিয়া
ভারতের বিষাক্ত কাশির সিরাপ সেবনের পর কমপক্ষে ৭০টি শিশু মারা যাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে গাম্বিয়া সরকার। ওই সিরাপের প্রস্তুতকারক মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং স্থানীয় পরিবেশকদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়ার কথা শুক্রবার ঘোষণা করেছে তারা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, ভারত থেকে আমদানি করা ওই বিষাক্ত সিরাপ সেবন করার পর গাম্বিয়ায় বিপুল সংখ্যক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা কিডনির মারাত্মক অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়। এতে মারা যায় কমপক্ষে ৭০টি শিশু। তার মধ্যে বেশির ভাগেরই বয়স ৫ বছরের নিচে। এ কারণে মেডিসিনস কন্ট্রোল এজেন্সির (এমসিএ) নির্বাহী পরিচালক ও উপপরিচালককে বরখাস্ত করেছে গাম্বিয়া।
এ বিষয়ে দেশটি একটি টাস্কফোর্স গঠন করে। তারা দেখতে পায় আমদানি করা এই সিরাপ এমসিএ’তে নিবন্ধিত নয়। আইন অনুযায়ী কোনো ওষুধ আমদানি করলে তা নিবন্ধিত হতে হয়।
কিন্তু ওই সিরাপ নিবন্ধিত না হওয়ায় পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দেশটির আইনমন্ত্রী এর আগে বলেছেন, কি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায় তা নির্ধারণ করতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ওদিকে কোনো অন্যায় হওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারক মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস। ভারত সরকার বলেছে, তারা এই সিরাপ নিয়ে পরীক্ষা করেছে। তাতে কোনো দূষণ পাওয়া যায়নি।
রয়টার্স লিখেছে, এ বিষয়ে স্থানীয় পরিবেশক আটলান্টিক ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। তবে গাম্বিয়া কর্তৃপক্ষ ও মৃত ২০টি শিশুর পরিবার এরই মধ্যে ওই দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এক বিবৃতিতে গাম্বিয়া সরকার বলেছে, আন্তর্জাতিক একটি আইনি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এখন আইনগত পরামর্শ নিচ্ছে সরকার। ভারত সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা বড় রকম আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, ভারতে তৈরি কাশির সিরাপে আছে প্রাণঘাতী বিষাক্ত পদার্থ ইথিলিন গ্লাইকল এবং ডাইইথিলিন গ্লাইকল। সাধারণত, গাড়ির ব্রেকে ব্যবহার করা হয় এই তরল। এসব উপাদান মানব স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী নয়।