Thursday, June 8জাতির কথা বলে
Shadow

অবশেষে জেলার বাইরে কাজে লাগতে যাচ্ছে দক্ষিণের দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাস

ভোলা নর্থ-২ নামের নতুন গ্যাসকূপপ্রথম আলো ফাইল ছবি
অবশেষে জেলার বাইরে কাজে লাগতে যাচ্ছে দক্ষিণের দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাস। কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) হিসেবে সিলিন্ডারে ভরে এ গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে শিল্পকারখানায়। এই সিএনজির প্রতি ঘনমিটারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা। আর পাইপলাইন থেকে এখন সরাসরি শিল্প গ্যাস পাচ্ছে ৩০ টাকায়।
ভোলা থেকে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছে বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকো। আজ রোববার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্ট্রাকো ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির মধ্যে ১০ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সুন্দরবনের পক্ষে কোম্পানির সচিব শাহ আলম মোল্লা ও ইন্ট্রাকোর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াদ আলী চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, সমস্যা সমাধানে বেসরকারি খাত সহায়তা করতে পারে। এতে সংকট উত্তরণ সহজ হবে। দেশে আজ যে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে, তার শুরুটা ইউরোপে। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সিএনজি করে বাইরে আনার মধ্য দিয়ে নতুন ধারা শুরু হচ্ছে। শিল্পে গ্যাস পেলে রপ্তানি বাড়বে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। ভোলার মানুষ অবশ্যই গ্যাস পাবে, এটা তাদের অধিকার।
ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম বলেন, আবাসিকে সংযোগ বন্ধ থাকায় সব প্রস্তুত থাকার পরও গৃহস্থালি কাজে ভোলার মানুষ গ্যাস পাচ্ছেন না। ভোলার মানুষ এ অধিকার আদায়ে আন্দোলন করছেন, দাবি জানাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি বিভাগের সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার। তিনি বলেন, ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাস আছে, যা বাইরে আনা যাচ্ছিল না। অথচ বিদেশ থেকে বেশি দামে গ্যাস আমদানি করতে হচ্ছে। তাই ভোলার গ্যাস বাইরে আনা একটা যুগান্তকারী ঘটনা।
এর আগে ১০ মে ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে তিতাসের আওতাধীন শিল্পকারখানায় সরবরাহের বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে জ্বালানি বিভাগ। এতে গ্যাসের দাম, বিভিন্ন সংস্থার মার্জিন, গ্যাস সরবরাহকারীর জন্য পালনীয় শর্তের বিষয় উল্লেখ করা হয়।
কয়েকটি কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করলেও ইন্ট্রাকোকে ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে সরবরাহের কাজ দেওয়া হলো। প্রথম পর্যায়ে দিনে ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সিএনজি আকারে আনা হবে। পরে তা আড়াই কোটি ঘনফুটে উন্নীত করা হবে। ভালুকা-গাজীপুরের জ্বালানি–সংকটে ভোগা কারখানাগুলো গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। মূলত তিতাস গ্যাস কোম্পানির আওতাধীন গ্রাহকদের মধ্যে এ গ্যাস বিতরণ করা হবে।
কোম্পানি পর্যায়ে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭ টাকা, সিএনজি স্টেশনগুলোর ক্ষেত্রে যা ৩৫ টাকা। এই ১৭ টাকার মধ্যে বাপেক্স, পেট্রোবাংলা, সুন্দরবন, আরপিজিসিএলসহ বিভিন্ন কোম্পানির মার্জিন, সঞ্চালন ও বিতরণ মাশুল, গ্যাস উন্নয়ন তহবিল, জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল ও ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সিএনজি স্টেশনগুলো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি করে আট টাকা মার্জিন পায়। সেখানে ভোলার গ্যাস আনতে ইন্ট্রাকো পাচ্ছে ৩০ টাকা ৬০ পয়সা। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার ব্যাখ্যা হচ্ছে, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ভোলা থেকে ঢাকা পর্যন্ত গ্যাস আনতে ২৩০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে।
ভোলায় গ্যাস উৎপাদনের কাজটি করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। আর বাপেক্সের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ভোক্তা পর্যায়ে তা সরবরাহ করে সুন্দরবন গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। সুন্দরবনের কাছ থেকে কিনে নিয়ে শিল্পে গ্যাস সরবরাহের কাজটি করবে সিএনজি খাতের কোম্পানি ইন্ট্রাকো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *