জয়পুরহাটে তাপমাত্রা নামল ৯.২ ডিগ্রিতে
ঘন কুয়াশার সঙ্গে জয়পুরহাটে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে শিক্ষার্থীরা। কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পুরো এলাকা। সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।
গত দুই দিন ধরে চলাচলের মতো তাপমাত্রা থাকলেও হঠাৎ আজ রবিবার তা কমে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আজ রবিবার জয়পুরহাট জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রয়েছে বলে জানায় জেলা আবওহাওয়া অফিস। তাই দুই দিন জেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ আদেশ যেসব প্রতিষ্ঠান অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান জেলা শিক্ষা অফিসার আমান উদ্দিন মণ্ডল।
সরেজমিন দেখা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক জেলা শিক্ষা অফিসারের লিখিত চিঠির আলোকে জয়পুরহাটের সব সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলো রবিবার ও সোমবার দুই দিনের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার সকালে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসার পর বন্ধের ঘোষণা পেয়ে বাড়িতে ফিরে যায়। অথচ জেলার কালাই উপজেলা শহরে অবস্থিত ওমর কিন্ডার গার্টেন স্কুল ও ওমর গার্টেন একাডেমি চালু রয়েছে।
জরুরি আদেশ অমান্য করে অধ্যক্ষ ওমর আব্দুল আজিজ তালুকদার নিজের ক্ষমতায় স্কুলের পাঠদানসহ সব কার্যক্রম চালু রেখেছেন।
এ বিষয়ে ওমর কিন্ডার গার্টেন স্কুল ও ওমর গার্টেন একাডেমির অধ্যক্ষ ওমর আব্দুল আজিজ তালুকদার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে কেউ চিঠি দেয়নি। তাই স্কুলের পাঠদানসহ সব কিছু চলমান রয়েছে। তা ছাড়া আমার অনেক শত্রুও রয়েছে। তারা আমার প্রতিষ্ঠানের মান ক্ষুণ্ণ করতে উঠে-পড়ে লেগেছে।
আপনরাই বলুন, চালু রাখা কি অপরাধ হয়েছে?’
কালাই পূর্বপাড়া মহল্লার অভিভাবক দেলোয়ার হোসেন শফি জানান, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে পুরো জেলার স্কুল যখন বন্ধ, তখনো ওমর স্কুল চালু। অনুপস্থিত থাকলে আবার জরিমানাও দিতে হবে। এ কেমন আইন? অধ্যক্ষ এমন কী ক্ষমতা পেয়েছেন যে সরকারের আইন অমান্য করে স্কুল চালাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
কালাই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধের চিঠি পেয়েই শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে। এরপর তারা বাড়ি ফিরে গেছে। অফিস খোলা রয়েছে।’
জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আমান উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় ২১ ও ২২ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা বাড়লে প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হবে, আর যদি কমতে থাকে সেই মোতাবেক পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
কালাইয়ে ওমর গার্টেন একাডেমি চালু আছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমিও শুনেছি। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টায় নওগাঁ ও জয়পুরহাটে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সেই মোতাবেক পাশের জেলা ও উপজেলায় তাপমাত্রা সামান্য তারতম্য হতে পারে।’